May 29, 2024, 1:54 pm

সংবাদ শিরোনাম
রংপুর সিটির তিন মাথায় নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু, ইউপি চেয়ারম্যান ও ভবন মালিকের যোগসাজসে গোপনে লাশ দাফন আদমদীঘির ধান শরিয়তপুরে উদ্ধার; গ্রেপ্তার-২ অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৬ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকা হতে গাঁজা ও বিদেশী পিস্তলসহ কুখ্যাত অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী সাগর’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কায় চালকের মৃত্যু ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে উপকুলের সতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত কুড়িগ্রামে বেবী তরমুজের চাষে তিন মাসে আয় দেড় লাখ টাকা মাঝরাত্রে প্রবাসীর ঘরে ঢুকে স্ত্রীও মা কে ছুরি মেরে পালালো দুর্বৃত্তরা বগুড়ার শিবগঞ্জে জাতীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন: এমদাদুল আহবায়ক রবি সদস্য সচিব গাইবান্ধা প্রেসক্লাব’র কমিটি গঠিত

শেরপুরে শ্রীহট্ট অর্থনীতি অঞ্চলের কাজ চলছে ধীর গতিতে: উদ্ভোধনের তিন বছর পরও কাজে অগ্রগতি নেই

মোঃ ফাহাদ আহমদ, হাইওয়ে প্রতিনিধি, শেরপুর (মৌলভীবাজার)ঃ
স্বাধীনতার ৪৭ বছর কেটে গেলেও শিল্প খাতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। সারাদেশে অপরিকল্পিতভাবে কিছু শিল্প কারখানা গড়ে উঠলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি ও বৈদেশিক রেমিটেন্সের উপর নির্ভরশীল। অর্থনীতির এই দৈনদশা থেকে বের হয়ে আসার উদ্দেশ্যে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০টি পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টি ও ১ কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরির উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রাথমিকভাবে ৫৯টি অঞ্চলের অনুমোদন মিলেছে তার মধ্যে প্রথম ১০টি অঞ্চল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি একযুগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ভোধন করেন এরমধ্যে মৌলভীবাজারের শেরপুরে শ্রীহট্ট অর্থনীতিক অঞ্চল ১ টি। প্রাথমিকভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত বেসরকারিভাবে ৬টি এবং ৪টি সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্দ্যোগে নির্মিত হবে। এ অঞ্চলগুলো থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের সুযোগ হবার কথা।
শেরপুর শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য সরকারি বেসরবকারি মিলিয়ে মোট ৩৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ শিল্পাঞ্চলে সিরামিক্স, টেক্সটাইল ও গ্লাস তৈরির এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৩৫২ একর জায়গার মধ্যে জলাধার হিসেবে ১১২ একর এবং বাকি ২৪০ একর জায়গায় কলকারখানা ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কতৃপক্ষ (বেজা) ২০১৭ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত আগ্রহী ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ২১২ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমি বরাদ্দ পেয়েছে পোশাক খাতে শীর্ষ কোম্পানি ডিবিএল। বরাদ্দ পাওয়া অন্যান্য কোম্পানি গুলো হলো গ্রেটওয়াল সিরামিক্স, পলমল প্রুপের দুটি কোম্পানি আয়শা কøথিন ও আসওয়াদ কম্পোজিট মিলস এবং আনারাশি ডাবল গ্লেজিং কোম্পানি। বরাদ্দ পাওয়া এই পাঁচটি কোম্পানি মোট দশ হাজার চারশ কোটি টাকা বিনোযাগ করবে বলে জানা যায়। শেরপুর শ্রীহট্ট অর্থনীতিক অঞ্চলে প্রায় চল্লিশ হাজার লোকের কমসংস্থান হবে। কিন্তু উদ্ভোধনের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তেমন কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের মধ্যে মাটি বরাট এর কাজ শেষ করে ২০২১ সাল নাগাদ কোম্পনি গুলোকে ফ্লট বুঝিয়ে দেয়ার কথা। বর্তমানে যে অবস্থায় কাজ চলছে, কবে তা শেষ হবে বলা মুশকিল। ২০৩০ সালের মধ্যে যে লক্ষ পূরণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল তা পূরণ করা অসম্ভব হয়ে পরছে। জমি অধিগ্রহণ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও চোখে পড়ছেনা কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
জানা যায়, জমি বরাদ্দ পাওয়া কোম্পানিগুলো বালি বরাটের চেষ্টা করলেও নানা জটিলতায় সম্ভব হচ্ছে না। ২০১৭ সালের মার্চের দিকে কুশিয়ারা নদী থেকে বালি উত্তোলন তালুকদার নামক একটি বালি বরাটের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান । কিন্তু নদী ভাঙনের ফলে বালি উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। পরে মেহেদি টেডার্স নামক অপর একটি প্রতিষ্ঠান বালি উত্তোলন শুরু করলে উত্তপ্ত পরিস্থির রূপ নেয় যা পরে কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। ফলে মুখ তুবরে পরছে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন। কতদিনে এ সমস্যার সমাধান হবে এ ব্যাপারে জানতে পারেনি কেউ। ফলে দিনদিন হতাশা বাড়ছে বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলোর। ইতিমধ্যে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী কোম্পনি ডিবিএল তাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া এ পরিকল্পনা কবে নাগাদ আলোর মুখ দেখবে তা বলা মুশকিল।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন প্রস্তাবিত সম্ভাবনাময় এই শেরপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ যে স্বপ্ন দেখছিল আজ তারা প্রায়ই হতাশ। ইতিমধ্যে গ্যাস সংযোগ ও বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য সাবষ্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু মূল অবকাঠামো উন্নয়নের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, অনেক গোপণ তথ্য জমি অধিগ্রহণে হয়েছে নানা দূর্নীতি। জমির দাম নিয়ে হয়েছে বিভিন্ন রকম ফের। এছাড়া বালি বরাট নিয়েও চলছে ষড়যন্ত্র। ফলে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নয়নের কাজে কোন গতি আসছে না বলে মনে করেন এলাকাবাসী। তাদের জোড়ালো দাবী অতিসত্বর প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করে সকল সমস্যা সমাধান করে দ্রুত শেরপুর শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু করা হোক।

 

 

 

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর